সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
‘মুজিব বর্ষ-পল্লী বিদ্যুতের সেবা বর্ষ’ পালনে আরইবি’র এজিএম সম্মেলন অনুষ্ঠিত
প্রকাশন তারিখ
: 2019-09-29
‘মুজিব বর্ষ-পল্লী বিদ্যুতের সেবা বর্ষ’ সফলভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাধীন ৮০টি পল্লী বিদ্যু সমিতি এলাকায় উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। উঠান বৈঠক ব্যাপকভাবে জোরদারের লক্ষ্যে ৩ ধাপে আরইবি’র এজিএম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় সাতশত সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) অংশ গ্রহণ করেন। উত্তম গ্রাহক সেবা নিশ্চিতকল্পে এ ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ ‘উঠান বৈঠক’ এর আয়োজন করা হচ্ছে দেশব্যাপী। গত ২৮-০৯-২০১৯ ইং তারিখ বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাধীন ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম সম্মেলনে আগত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সমাপনী বক্তব্যে চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অবঃ) বলেন, সকলের কর্তব্যনিষ্ঠা, একাগ্রতা, সততা ও আন্তরিকতার সাথে ঐকবদ্ধভাবে কাজ করায় বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম শতভাগ সফলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, দালালদের দৌরাত্ম থেকে সর্বসাধারণকে নিরাপদ রেখে হয়রানিমুক্ত বিদ্যুৎ সংযোগের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করা এবং তাদের প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি বিধায় গ্রাহক হয়রানি অব্যাহত রয়েছে। ফলে বর্তমান সরকারের আমলে আমাদের অর্জিত আকাশ-ছোঁয়া সাফল্য কিছুটা হলেও ম্লান হচ্ছে। এ সমস্ত অপশক্তি চিরতরে নির্মুল করে সম্পূর্ণ হয়রানিমুক্তভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং উত্তম গ্রাহক সেবা প্রদানে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ; যা সময়ের দাবীও বটে। আরইবি চেয়ারম্যান বলেন, উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সরাসরি প্রান্তিক পর্যায়ের নিরীহ, গরিব, অসহায়, কৃষক, শ্রমিক, গৃহিনীসহ সকল শ্রেণি/পেশার গ্রাহকের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করার অনন্য মাধ্যম। সারা বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামের এ সকল জনগোষ্ঠি বিদ্যুৎ অফিসে আসার বা যোগাযোগের সুযোগ পায় না। ফলে অতি সহজেই সাধারণ জনগোষ্ঠি দালাল শ্রেণির খপ্পরে পড়ে। তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের “সোনার বাংলা” বিনির্মাণের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কালজয়ী রূপকল্প “ভিশন ২০২১” বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এ ধারাবাহিকতায় “শেখ হাসিনার উদ্যোগ-ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” তথা শতভাগ উপজেলা বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে আমাদের গ্রাহক সংখ্যা ৭৪ লক্ষ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে হয়েছে ২ কোটি ৭২ লক্ষ। বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী ২৮% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৯৫% এ উন্নীত হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে ইতোমধ্যে দেশের ৪৬১টি উপজেলার মধ্যে ৩৪১টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়িত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শত ব্যস্ততার মাঝেও ২১১টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন করেছেন। এ জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান মহোদয় গভীর কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। অবশিষ্ট ১২০টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে; যা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী “মুজিব বর্ষের” মধ্যেই সম্পন্ন হবে। ‘মুজিব বর্ষ-পল্লী বিদ্যুতের সেবা বর্ষ’ হিসেবে পালনের লক্ষ্যে নিম্মেবর্ণিত জনকল্যাণমূখী ১০টি কর্মসূচী নির্ধারণ করা হয়েছে যা “মুজিব বর্ষ- পল্লী বিদ্যুতের সেবা বর্ষ” হিসেবে পালন, জনগণের শতভাগ বিদ্যুৎ পাওয়া নিশ্চিত করা, গ্রাহক হয়রানি নিরসনে “আলোর ফেরিওয়ালা” কর্মসূচী অব্যাহত রাখা, গ্রাহক সেবায় পল্লী বিদ্যুতের “উঠান বৈঠক” জোরদার করা, “আমার গ্রাম-আমার শহর” বিনির্মাণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স” নীতি জোরদার করা, “ডিজিটাল বাংলাদেশ” বিনির্মাণে “পেপারলেস অফিস” চালু করা, “তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি” অর্জনে বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা, কৃষি এবং শিল্প ক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহিত করা, পরিবেশ বান্ধব ২০০০ সোলার সেচ পাম্প স্থাপন।
এজিএম সম্মেলনে সরকারের যুগ্ম সচিব ও আরইবি’র সদস্য (অর্থ) জনাব মোঃ নাজমুছ সাদাত সেলিমসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের এজিএম সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অবঃ)।